কষ্টের কবিতা। বিরহের কবিতা।best sad bangla kobita। স্বার্থের কবিতা
কষ্টের কবিতা। বিরহের কবিতা।best sad bangla kobita। স্বার্থের কবিতা
প্রেম নিবেদনের কবিতা।স্বার্থের কবিতা। বাংলা কবিতা
কবিতা: স্বার্থ
লেখা:এ.বি.এম ওয়ায়েছ কুরনী
স্বার্থ ছাড়া কিছু নাহি বুঝি আর
স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটিলে মানুষ হয়ে যায় পর ।
স্বার্থেই পড়িলে টান
মুখটা হয়ে যায় বেজায় কালো ।
যদিও সে মানুষটা ছিল অনেক ভালো ।
স্বার্থ ছাড়া নাহি চলে কোন মানামানি
ভাইয়ে ভাইয়ে চলে, শুধু হানাহানি ।
স্বার্থেই পড়িলে টান হয়ে যায় অন্ধ
থাকেনা জ্ঞান ভালোমন্দ ।
ভিক্ষুককে করি দান
দেখিলে খারাপ স্বপন ।
আসলে মনে আছে তাদের জন্য
ঘৃণাভরা পদ্মাসন ।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কাটে যে জীবন
কবে বুঝি ছাড়িতে হয় স্বার্থের এই ভুবন ।
তবু বোকা মানুষের হয়নাতো হুশ
স্বার্থেই পড়িলে টান করে হুশফুশ ।
সবাই বুঝিতে পারে ছাড়িবার পূর্বে নিঃশ্বাস
ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়,ছিল যত ভ্রান্ত বিশ্বাস ।
তখন নাহি থাকে আর
শোধরানোর একটুখানি সময় ।
স্বার্থের দিকে না চাহিয়া,
দেখো চাহিয়া আছে যত কল্যাণ
পৃথিবীর বুকে মানুষের মনে
রয়ে যাবে চিরকাল হয়ে অম্লান ।
সময় থাকিতে হও সাবধান।
বিনিময়ে হয়তো পেতে পারো
পরকালে বড় প্রতিদান ।
আমাদের পৃথিবীটা অনেক স্বার্থের। মানুষের স্বার্থে টান পড়লে, তখন মানুষের প্রকৃত মুখোশটা বেরিয়ে আসে।ভালোমানুষের আড়ালে লুকিয়ে থাকা তার প্রকৃত পশুত্ব রুপটা প্রকাশ পায়।এই পৃথিবীতে বাবা-মা ব্যতীত সবাই আপনার কাছে নিজের নিজের স্বার্থ খুঁজবে।তাদের স্বার্থ যদি হাসিল না হয় তারা আপনাকে ছুড়ে ফেলতে দ্বিধাবোধ করবে না।আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটাই সত্য,এটাই বাস্তব।স্বার্থে টান পড়লে আপনার প্রিয়তমা স্ত্রী,স্বামী,সন্তান ও আপনাকে দূরে ফেলে দিবে,শুধু সেই সময়ের অপেক্ষামাত্র ।আপনি ক্ষণিকের ভিতরে আবর্জনাতে পরিণত হবেন।তবে হ্যা, সব স্বামী,স্ত্রী,সন্তান যে স্বার্থের দিকে নজর দিবে তা এমন নয় তবে অামাদের বর্তমান সমাজের অধিকাংশ মানুষের মনের প্রকৃত অবস্থাটা খুবই সংকীর্ণ। হয়তো বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার মনে হতে পারে আপনার স্বামী,স্ত্রী,সন্তান আপনাকে প্রচন্ড পরিমাণে ভালোবাসে।হ্যা অাপনাকে প্রচন্ড ভালোবাসে,প্রকৃত মুহুর্ত না আসলে আপনি সেটা বুঝতে পারবেন না। এই ভালোবাসার বিপরীত দিকটা দেখতে পাবেন যদি আপনি কোন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হন,আপনি যদি তাদের অপ্রিয় কাজগুলো করে থাকেন তখনই হয়তো কিছুটা বুঝতে পারবেন।এসব ঘটনার উপস্থিতি না ঘটলেও তাদের প্রকৃত মুখোশ খুলে যাবে আপনি যখন বৃদ্ধ হবেন।আপনি হয়তো এই বিষয়টা মানতে পারছেন না তবে এটাই সত্য, নিজের জীবনের সাথে মেলানোর ব্যাপারটা নিতান্তই আপনার দায়িত্ব। এবার একটু রক্তের সম্পর্কের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক।আপনার রক্তের সম্পর্কের প্রিয় ভাই-বোন,মামা-মামী,চাচা-চাচি,ভাতিজা ইত্যাদি আশেপাশের কাছের মানুষ যাদেরকে ছাড়া আপনি এই পৃথিবী কল্পনা করতে পারেন না। প্রচন্ড স্নেহভরা মায়ায়,ভালোবাসেন ছোট ভাই-বোনকে।প্রচন্ড ভালোবাসা দিয়ে সম্মান করেন প্রিয় বড় ভাই-বোনকে,অন্যান্য আত্নীয়স্বজনকে ।এবার কল্পনা করুন সময়ের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে আপনি ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলেন।একটি নির্দিষ্ট সময় ঘনিয়ে আসলো,আপনি প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন।আপনাদের সব ভাই-বোনদের আলাদা আলাদা পরিবার হয়েছে আর ততদিনে বাবা-মা পরকালে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু বাবা-মা রেখে যান তাদের সকল সহায়-সম্পত্তি। কিছুদিন পরে এমন একটি সময় ঘনিয়ে আসে যখন সবারই অর্থের প্রয়োজন দেখা যায়। তারপর বাবা-মায়ের রেখে যাওয়া সম্পত্তি ভাগাভাগি।ঠিক এই সময়ে এসে অনুধাবন করা যায়, প্রিয় ভাই-বোনের সম্পর্কও যে স্বার্থের হতে পারে সেটা হয়তো আপনি এবার কিছুটা আঁচ করতে পারবেন। তবে আমি বলছি না সব ভাই-বোনেরা এক বা সমমনের অধিকারী। এমন অনেক ভাই-বোন আছেন যারা নিজের স্বার্থকে বলি দিয়ে দেন।এবার আসি আমাদের নিজেদের সম্পর্কে, একবার ভাবুন তো আপনি কি বিনা স্বার্থে মানুষের পাশে দাড়ান? আপনি কী অনাহারী মানুষকে সহায়তা করেন? অাপনি কী এতিমের পাশে দাড়িয়েছেন?আপনি কী প্রতিবেশীর খোঁজ রাখেন? এই কাজগুলো অনেকে করেন তবে সেই ভালো মানুষের সংখ্যা খুবই কম।আমাদের ভিতর এমন মানুষের সংখ্যা বেশি যারা ঘুমের ভিতর ভয়ংকর স্বপ্নের উপস্থিতি না পেলে ভিক্ষুককে একটি টাকাও দান করতে চায় না।আমাদের সবারই উচিত এই স্বার্থটাকে প্রাধান্য না দিয়ে মানুষের পাশে দাড়ানো,আত্নীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখা।দান করা,অন্যের উপকারে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করা।তাহলে আমরা দুনিয়ার জীবন এবং মৃত্যুর পরের আরেকটি জীবনে হয়তো একটু হলেও শান্তিতে থাকতে পারবো।
লেখাঃ এ.বি.এম. ওয়ায়েছ কুরনী
কোন মন্তব্য নেই